
ফলের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নির্দেশনা স্থগিত
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশনা জারির এক দিনের মাথায় তা স্থগিত করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই নির্দেশনা স্থগিত করা হয়েছে।”
পিছু হঠার কোনো কারণ মন্ত্রী না জানালেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার দাবি, ‘মন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে’ ওই ফাইলে তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিল। গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে আসে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নির্দেশনা সংক্রান্ত ফাইল তলব করে তা স্থগিত করেন। আরো আলোচনা ও যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ওই ফাইলে নোট দিয়েছেন তিনি।”
এ বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো ভর্তি সংক্রান্ত এক নির্দেশনায় বলা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে শিক্ষার্থীদের প্রচুর অর্থ ব্যয় এবং দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
“এ অবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হলে শিক্ষার্থীদের সেশন শুরু তরান্বিত হবে এবং অভিভাবকদের হয়রানি লাঘব হবে।”
বিদ্যামান ভর্তি পরীক্ষার বদলে এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করার ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যায় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয় তাতে।
বর্তমানে দেশের ৩৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো করে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে প্রথমবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে।
দেশের ৮০টি নিবন্ধিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করলেও বাকিগুলোতে সরাসরি ভর্তির সুযোগ পান উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণরা।
গত কয়েক বছর ধরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কথা বলা হলেও বড় বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরোধিতায় তা হয়নি।
তবে গত কয়েক বছর ধরে এসএসসির ফলের ভিত্তিতেই উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।
‘নির্দেশনাটি চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে’
স্থগিত হয়ে গেলেও ফলের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাটি ‘চিন্তার খোরাক’ যুগিয়েছে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
তিনি বলেন, “ভর্তি পরীক্ষার সময় বিশাল যজ্ঞ হয়। আমরা আগেই বিকল্প খুঁজছিলাম। এই নির্দেশনা আমাদের চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে।”
“ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলে...দেশব্যাপী কিন্তু একই মানে পরীক্ষা হয় না- এটাও ভাবতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার সঙ্গে আলোচনা করে তবেই তিনি এ বিষয়ে মত প্রকাশ করতে চান।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যদের সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’ এর সভাপতি এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রুহুল আমীন বলেন, ফলের ভিত্তিতে ছাত্র ভর্তিতে তাদের আপত্তি নেই। তবে তার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বক্তব্যও শুনতে হবে।
“দেশের স্বার্থে, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে যেটা ভাল, অন্যদের মতো আমরাও তা করতে চাই।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আনোয়ারুল আজিম আরিফ মনে করেন, ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলে ঝামেলা কমবে।
“সব জায়গায় সমান পড়াশোনা হয় না। তবে ভালো ফলের সঙ্গে মেধার একটা সম্পর্ক আছে।”
This comment has been removed by the author.
ReplyDeletegreat post
ReplyDelete